আলসার কিভাবে ভালো হয়
সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা কত টাকাআলসার কিভাবে ভালো হয়, আপনার যদি আলসার হয়ে থাকে তা থেকে স্থায়ীভাবে যদি মুক্তি চান, তাহলে এই পোস্টের মধ্যমে আমরা আজকে আপনাকে জানাব কিভাবে তা ভালো হয়।
আর আপনি যদি ঘরোয়া ভাবে তারা তারি সুস্থ হওয়ার সহজ উপায় জানতে চান, সেটা আজকে আমরা এই পোস্টের মধ্যমে জানাব। আরো জানতে পারবেন কিভাবে খাবার দাবার খাবেন এবং মানসিক চিন্তা থেকে দুরেথেকে আলসার থেকে মুক্তি পাবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ আলসার কিভাবে ভালো হয়
- আলসার কিভাবে ভালো হয়
- আলসার আসলে কী আর কেন হয়
- এইচ,পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি
- ওষুধ ছাড়া ও আলসার থেকে মুক্তির উপায়
- আলসার সারাতে কেমন খাবার খাবেন
- কোন খাবারগুলোতে অ্যাসিড বাড়ে, সেগুলো বাদ দিন
- ঘরে বসে প্রতিকার আর ভেষজ চিকিৎসা
- মানসিক চাপ আর আলসার নিরাময়
- ওষুধ কখন আর কীভাবে খাবেন
- দীর্ঘমেয়াদী নিরাময় ও প্রতিরোধ
- অপারেশন কখন দরকার হতে পারে
- উপসংহারঃ আলসার কিভাবে ভালো হয়
আলসার কিভাবে ভালো হয়
আলসার আসলে কী আর কেন হয়
আলসার হলো মূলত পেটের ঘা যা মানুষের পেটের ভেতরের পাতলা অংশে হয়ে থাকে। এই ঘা যখন মানুষের পাকস্থলীর অ্যাসিডের কাছা কাছি যায়, তখন মারাত্বক ভাবে মানুষের পেটে তীব্র ব্যথা ও জালা পোরার সৃষ্টি করে। এর ফলে মানুষের বুক জালাপোড়া, বমি বমি ভাব, আর পেট ফুলতে শুরু হয়। আর এই লক্ষণগুলো হলে আলসারের প্রধান লক্ষন। যদি আলসারে আক্রান্ত কোন রোগি সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করে তাহলে এর অবস্থা অনেক খারাপ হতে পারে।
পেটের আলসারের সববচেয়ে সাধারণ কারণ হলো (এইচ.পাইলোরি) নামে একটা ব্যাকটেরিয়া। আর এই ব্যাকটেরিয়া পেটের ভিতর ঢুকে আস্তে আস্তে পেটের ভিতরে ক্ষত তৈরি করে। আর তার পরে শুরু হয় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা কিন্তু সময় মতো চিকৎসা না নিলে এটা বড় ও প্রানঘাতি হিসেবে রূপ নেয়। আর মুলত এটা শুরু হয় দূষিত খাবার আর অপরিষ্কার পানি বা অন্য কারো মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢোকে। তাই সবার উচিৎ পরিষ্কার পানি ও ভালো খাবার খাওয়া।
এইচ,পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি
এই ব্যাকটেরিয়া দূর করার জন্য ডাক্তার তিন প্রকার থেরাপি দিয়ে থাকে। তা হলো দুই প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক ও একটা এসিড কমানোর ঔষধ। অ্যান্টিবায়োটিক গুলো আক্রান্ত রোগির ব্যাকটেরিয়া মারার কাজ করে। এবং ঔষধ পেটের ঘা শুকাতে সাহায্য করে। আর আলসার ভাল করার জন্য এই থেরাপির কোর্সটা সম্পন্ন করা খুবই গুরত্বপূর্ণ
আরো পড়ুনঃ গোলাপ জল মুখে কিভাবে ব্যবহার করব
আর মনে রাখবেন ডাক্তার যখন থেরাপি দিয়ে থাকে এই থেরাপির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে তা হলো আপনার পাতলা পায়খানা ও পেটে অস্বস্তি। তবে মনে রাখবেন ডাক্তারের পরামর্শ না পাওয়া পর্যন্ত ঔষধ খাওয়া বন্ধ করবেন না। আর যদি আপনি ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দেন তহলে আপনার আলসারের সংক্রমণ সম্পূর্ণ ভালো হলেও আবার নতুন করে শুরু হতে পারে।
ওষুধ ছাড়া ও আলসার থেকে মুক্তির উপায়
ওষুধের খাওয়ার পাশাপাশি আলসারে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছু খারপ অভ্যাস পরিবর্তন করলে আলসার দ্রুত ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে। যেমন সবার আগে যদি আলসার আক্রান্ত ব্যক্তি যদি ধুমপান আর মদ্যপান একেবারেই ছাড়তে হবে। তার কারণ এসব জিনিস আলসারকে আরো গুরুতর ভাবে আক্রান্ত করে। এর পর প্রতি দিন হালকা হালকা করে ব্যয়াম ও হাটা হাটি করলে হজম শক্তি ভালো হয়ে থাকে এই নিয়ন মেনে চলতে পারলে পেটের ভিতরের অংশকে সুস্থ করে তুলতে খুব ভালো কাজ করে।
আর মানসিক চাপ বা পেরেশানি আলসারের ব্যথা বাড়িয়ে দেয় এবং পেটের ভিতরের ঘা শুকাতে আরো দেরি হয়। তাই আপনাকে থাকতে হবে মানসিক চাপ মুক্ত আর অভ্যাস করতে হবে যোগব্যায়াম, এবং জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার মতো চাপ কমানো দরকার। আর শরীরকে ভালা রাখতে বেশি পরিমানে পানি পান করেতে হবে। এই অভ্যাসগুলো আপনাকে ভবিষ্যতে আলসার থেকে দূরে থাকতেও সাহায্য করবে।
আলসার সারাতে কেমন খাবার খাবেন
আর আলসার ভালো হওয়ার জন্য আপনাকে খাওয়া দাওয়া ক্ষেত্রে কিছু অভ্যাস বিশাল ভূমিকা রাখে। বেশি মসলাদার, তেলযুক্ত এবং ভিটামিন সি- জাতীয় খাবার—যেমন লেবু, টমেটো বা টক ফল—এড়িয়ে চলতে হবে। কফি বা চা পানীয় কম পান করুন। প্রতি দিন খাবার খাওয়ার সময় একবারে বেশি না খেয়ে কম কম করে কিছুখন পর পর খাবার খেলে হজম সহজ হয় এবং পাকস্থলীর ওপর চাপ কমে। এতে আলসার কে কমতে সাহয্য করবে।
আলসারের রোগীদের জন্য আশযুক্ত খাবার খুবই উপকারী। কলা, আপেল আর গাজরের মতো খাবারগুলো পাকস্থলীর অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। আর দই বা টক দই ভালো ব্যাকটেরিয়াযুক্ত খাবারগুলো আলসারের ঘা শুকাতে সাহায্য করে। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় বেশি থেকে বেশি করে অরগানিক বা দেশি শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন। কারণ সঠিক নিয়মে খাবার খেলে আলসার দ্রুত সারানোর জন্য কাজ করে থাকে।
কোন খাবারগুলোতে অ্যাসিড বাড়ে, সেগুলো বাদ দিন
মনে রাখবেন পেটের অ্যাসিড আলসারের ঘা আরও খারাপ করে দেয়, তাই আপনার উচিৎ অ্যাসিড যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা। যেমন ভিনেগার, সস এবং জলপাই, লেবু, কমলা, আঙুর খাওয়া একদম বন্ধ করে দিতে হবে। আর এখনকার মানুষ বলে খাবার শেষে কিছু না খেলে খাবার হজম হয়না, যেমন খাওয়ার পারে মিষ্টি কিছু খাওয়া এসব খাবার বাদ দিতে হবে। তা নাহলে আপনার আলসার আরো বাড়তে পারে। এসব খবারের অভ্যাস বাদ দিন আপনার পেট ভালো থাকবে।
এছাড়াও, আরো কিছু খাবার আছে যা হজম হতে সময় লাগে যেমন চর্বিযুক্ত এবং ভাজাপোড়া খাবার। এর জন্য পেট থেকে বেশি পরিমাণে অ্যাসিড বের হয়। তার জন্য ভাজাপোড়া ও ফাস্ট ফুড এরিয়ে চলাই ভালো। মনে রাখবেন, একেকজনের শরীর একেকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাই কোন খাবারগুলো আপনার জন্য সমস্যা করছে, তা খেয়াল করে বাদ দিন। এতে আপনার আলাসার তারা তারি ভালো হতে সাহায্য করবে।
ঘরে বসে প্রতিকার আর ভেষজ চিকিৎসা
আলসার কিভাবে ভালো হয়, আলসারের চিকিৎসায় জন্য কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা আছে যা আলসার ভালো হতে সাহায্য করতে পারে। তবে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যেমন মধু মধু এমন একটি প্রাকৃতিক জিনিস যার মধ্যে অনেক উপকারী উপাদান, যা এই আলসারের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। অ্যালোভেরা জেল খেলে পেটের ভিতরের অংশ শান্ত হয় এবং ব্যথা কমায়। এ সকল খাবার খেলে আপনার আলসার ভালো হতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে কম খরচে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়
কাঁচা হলুদ আপনার পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, যা আলসারের জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। যষ্টিমধু খেলে পেটের ভেতরের অংশ শক্তিশালি হয় তবে, মনে রাখবেন, এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো মূল চিকিৎসার বিকল্প নয়, বরং সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরোয়া উপায় এর সাহয্য নেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
মানসিক চাপ আর আলসার নিরাময়
মানসিক চাপ ও পেরেশানি সরাসরি আলসার সৃষ্টি না করলেও, এটা আলসারের জালা ও উপসর্গগুলো অনেক বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আপনার মানসিক চাপের কারণে পেটের ভিতর থেকে এসিড বেশি পরিমানে বের হয় এবং আপনার পেটের ব্যথা ও জ্বালা তীব্র হয়। তাই, আলসার ভালো করার জন্য মানসিক চাপ কমানো খুবই জরুরি। এতে আপনার আলসার কমাতে সহায়ক হবে।
মানুষের পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমানোর জন্য অনেক ভালো। যেহেতু আপনি আলসারে আক্রান্ত সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। যদি খুব বেশি সমস্যায় পড়েন, তবে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন। এতে আপনার আলসার ভালো হতে সাহায্য করবে।
ওষুধ কখন আর কীভাবে খাবেন
আলসারের ওষুধগুলো সাধারণত খাবার আগে বা পরে নির্দিষ্ট একটা সময়ে খেতে হয়। এই ঔষধ খাবারের ব্যপারটা অবশ্য ডাক্তার আপনাকে বলে দিবে তার পরও আপনাকে বাড়তি হিসাবে বলতেছি যেমন, প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস প্রায়ই সকালে খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে খেতে বলা হয়। অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ঠিক সময়ে সেবন করা খুব দরকার, না হলে ব্যাকটেরিয়া ওষুধের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।
আর আপনি যদি কোনো সময় ওষুধ খেতে ভুলে যান, তাহলে মনে পরলেই খেয়ে নিন। আর যদি দেখেন আবার পরের ডোজ খাওয়ার কাছাকাছি হয়ে গেছে তাহলে কখনো দুই ডোজ ঔষধ খাবেন না। আর যদি আপনি লক্ষ করেন ঔষধ খাওয়ার পর আপনার সমস্যা হচ্ছে তাহলে তারা তারি ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তবে একটা কথা মনে রাখবেন আলসারের কোন ঔষধ ডাক্তাররের অনুমতি ছাড়া খাওয়া বাদ দিবেন না।
দীর্ঘমেয়াদী নিরাময় ও প্রতিরোধ
মনে রাখবেন আলসার প্রথমবার সেরে গেলেও আবার পাল্টা হতে পারে। এজন্য আপনাকে সম্পূর্ন ভাবে সুস্থ হওয়ার জন্য বা থাকার জন্য আপনাকে অনেক কিছু খারপ অভ্যাস ছাড়তে হবে। ধুম পান অস্বাস্থ্যকর খাবার সারা জিবনের জন্য বাদ দিতে হবে। এবং ভালো খাবার ও পরিমান মত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। তাই সম্পূর্ন সুস্থ হওয়ার জন্য আপনাকে সব সময় এসব মেনে চলা জরুরী।
খুব বেশি দরকার ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া বাদ দিতে হবে। যদি অনেক বেশি ব্যথা হলে খেতেই হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অ্যাসিড কমানোর ওষুধ সহ খাওয়া ভালো। আর প্রতিবার খাবার খাওয়ার আগে নিয়মিত হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে আলসার কমতে সহায়ক হবে। মনে রাখবেন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই আলসার প্রতিরোধে মূল ভূমিকা রাখে।
অপারেশন কখন দরকার হতে পারে
আলসার কিভাবে ভালো হয়, মনে রাখবেন বেশিরভাগ আলসারই ওষুধ আর আপনার কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই কমে যেতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খারাপ হলে অপারেশনের দরকার হতে পারে। যদি আলসারের কারণে পেটে ভেতরে রক্তক্ষরণ হয় এবং সেটা কোনোমতেই বন্ধ করা না যায়, তাহলে অপারেশন জরুরি।
আরো পড়ুনঃ ৫০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
আলসারের কারণে আপনার পেটের ভিতরে ছিদ্র হয়ে গেলে খাবার যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেলে অপারেশন করা দরকার হয়। যদি অনেকদিন চিকিৎসা করার পরেও আলসার না সারে, তবে ডাক্তার অপারেশনের কথা ভাবতে পারেন। অপারেশনের মাধ্যমে আলসারের ঘা সারানো হয় অথবা পাকস্থলীর অ্যাসিড তৈরির নার্ভগুলো ব্লক করে দেওয়া যেতে পারে।



সার্ভিস আইটির নিয়ম মেনে কমেন্ট করুন প্রত্যেকটা কমেন্টের রিভিউ করা হয়।
comment url