পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের গুরুত্ব ও তা ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহ পরিণত
পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের গুরুত্ব ও তা ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে শাহাদার পর নামাযের অবস্থান। এটি প্রতিটি মুসলিমের জন্য একটি আবশ্যকীয় ইবাদত, যা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ফরয করা হয়েছে। নামায শুধু একটি ধর্মীয় কর্ম নয়, এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়কারীর জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার এবং তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। এই পোস্টে আমরা নামাযের গুরুত্ব এবং তা আদায় না করার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করব।
নামাযের অপরিহার্য গুরুত্ব
কুরআন ও হাদিসে নামাযের গুরুত্ব সম্পর্কে অসংখ্যবার জোর দেওয়া হয়েছে। এটি মুসলিম জীবনের পরিচয় বহন করে।
- ঈমান ও কুফরের মাঝে পার্থক্য: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আমাদের এবং কাফিরদের মাঝে পার্থক্যকারী বিষয় হলো নামায। যে ব্যক্তি তা ছেড়ে দিল, সে কুফরি করল।" (মুসনাদে আহমাদ)। এই হাদিস থেকে নামাযের গুরুত্ব বোঝা যায়।
- সর্বোচ্চ ইবাদত: নামায হলো আল্লাহর সামনে বিনম্রতা ও আনুগত্য প্রকাশের সর্বোচ্চ রূপ। এটি বান্দাকে তার রবের সবচেয়ে কাছে নিয়ে যায়।
- কিয়ামতের দিন প্রথম হিসাব: কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব নেওয়া হবে। যদি নামাযের হিসাব ভালো হয়, তাহলে অন্যান্য আমলও সহজ হয়ে যাবে।
- মনের প্রশান্তি: নামায মনকে শান্ত করে, দুশ্চিন্তা দূর করে এবং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে।
নামায ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহ শাস্তি
যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে এবং কোনো বৈধ কারণ ছাড়া নামায ছেড়ে দেয়, তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন, "তাদের পরে এল এমন এক অপদার্থ জাতি, যারা নামায নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল; সুতরাং তারা অচিরেই জাহান্নামের 'গাই' নামক উপত্যকায় নিক্ষিপ্ত হবে।" (সূরা মারয়াম, আয়াত: ৫৯)।
নামায ত্যাগকারীর জন্য হাদিসেও কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে।
- জাহান্নামের কঠিন শাস্তি: রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দিল, তার জন্য জাহান্নামের 'গাই' নামক উপত্যকা অপেক্ষা করছে।" এটি জাহান্নামের সবচেয়ে ভয়ংকর উপত্যকাগুলোর একটি।
- আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত: যে ব্যক্তি নামায ছেড়ে দেয়, তার ওপর থেকে আল্লাহর রহমত উঠে যায় এবং তার জীবন থেকে বরকত চলে যায়।
- অন্যান্য আমল নষ্ট: নামাযের অভাবে অন্যান্য নেক আমলও কবুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
- শয়তানের অনুসরণ: নামায ত্যাগ করা মূলত শয়তানের প্ররোচনায় নিজেকে সঁপে দেওয়া। এটি বান্দাকে ধীরে ধীরে খারাপ কাজের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
ফকীহগণ বলেন, যে ব্যক্তি নামাযের ফরযিয়াত অস্বীকার করে, সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি অলসতা বা অবহেলার কারণে নামায ছেড়ে দেয়, সে কবীরা গুনাহকারী।
আসুন, আমরা নামাযের গুরুত্ব উপলব্ধি করি এবং এটিকে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করি। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায সময়মতো আদায় করার তাওফিক দান করুন।
সার্ভিস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url