বাংলাদেশে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফরম পূরণ করার সহজ উপায় ২০২৫ A to Z

আয়কর রিটার্ন ফাইল করা কি আপনার কাছে ঝামেলার মনে হয়প্রতি বছর এই কাজটি করতে গিয়ে অনেকেই হিমশিম খান। কিন্তু বিশ্বাস করুন, সঠিক দিকনির্দেশনা থাকলে এটি খুব সহজ একটি কাজ। আজকের ব্লগে আমরা ২০২৫ সালের জন্য ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফরম পূরণের সবচেয়ে সহজ উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।


কেন আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন?

আয়কর রিটার্ন শুধু একটি আইনি বাধ্যবাধকতাই নয়, এর মাধ্যমে আপনি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আপনার ভূমিকা পালন করেন। এটি আপনার আয়ের সঠিক হিসাব রাখতে এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া, ঋণ বা ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করার সময়ও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ফরম পূরণের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। এতে সময় বাঁচবে এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।

  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
  • টিন সার্টিফিকেট (TIN Certificate)
  • বেতন বিবরণী (Salary Statement), যদি চাকরিজীবী হন
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • বিনিয়োগের প্রমাণপত্র (সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস ইত্যাদি)
  • গৃহ সম্পত্তি বা অন্যান্য উৎস থেকে আয়ের বিবরণ (যদি থাকে)
  • ব্যয় সংক্রান্ত বিল ও রশিদ (যদি প্রযোজ্য হয়)

ফরম পূরণের ধাপসমূহ

২০২৫ সালের জন্য সাধারণত IT-11G বা IT-Gha ফরম ব্যবহৃত হয়। ফরমটি হাতে অথবা অনলাইনে পূরণ করা যায়।

ধাপ ১: ব্যক্তিগত তথ্য

প্রথমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন। এর মধ্যে রয়েছে নাম, ঠিকানা, টিন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি। নিশ্চিত হয়ে নিন যে সব তথ্য আপনার টিন সার্টিফিকেটের সাথে মিলছে।

ধাপ ২: আয়ের উৎস

আপনার আয়ের সকল উৎস এই অংশে উল্লেখ করতে হবে। যেমন:

  1. চাকরি থেকে আয়: আপনার মূল বেতন, বোনাস, ভাতা ইত্যাদি।
  2. ব্যবসায় বা পেশা থেকে আয়: ব্যবসার লাভ-ক্ষতি বা পেশাগত আয়।
  3. গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়: বাড়ির ভাড়া থেকে প্রাপ্ত আয়।
  4. মূলধন লাভ: শেয়ার বা জমি বিক্রি থেকে প্রাপ্ত লাভ।
  5. অন্যান্য উৎস: ব্যাংক থেকে সুদ, সঞ্চয়পত্র থেকে আয় ইত্যাদি।

ধাপ ৩: বিনিয়োগ ও ছাড়

এই অংশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আপনি আপনার বিভিন্ন বিনিয়োগ যেমন - ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, জীবন বীমা, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ইত্যাদি উল্লেখ করে কর ছাড় দাবি করতে পারেন।

ধাপ ৪: কর হিসাব

আপনার মোট আয় থেকে করযোগ্য আয় নির্ণয় করুন এবং প্রযোজ্য কর হার অনুযায়ী করের পরিমাণ হিসাব করুন। এরপর যদি আপনার উপর কোনো কর দায় থাকে, তা পরিশোধ করুন।

ধাপ ৫: ফরম জমা ও প্রাপ্তিস্বীকারপত্র সংগ্রহ

সম্পূর্ণ ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করার পর, এটি অনলাইনে বা সরাসরি কর অফিসে জমা দিন। যদি অনলাইনে জমা দেন, তাহলে প্রাপ্তিস্বীকারপত্র (Acknowledgement Receipt) ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করুন। এটি ভবিষ্যতে প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে।


অনলাইনে ফরম পূরণের সুবিধা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে সহজেই রিটার্ন জমা দিতে পারেন। এতে সময় বাঁচে এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। অনলাইনে ফরম পূরণ করার সময় সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনেক হিসাব করে দেয়।

© ২০২৫ সকল অধিকার সংরক্ষিত। এই ব্লগ পোস্টটি শুধুমাত্র তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনো আইনি পরামর্শের জন্য একজন পেশাদার কর উপদেষ্টার সাথে যোগাযোগ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সার্ভিস আইটির নিয়ম মেনে কমেন্ট করুন প্রত্যেকটা কমেন্টের রিভিউ করা হয়।

comment url