বাংলাদেশে পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট আবেদনের বিস্তারিত গাইডলাইন: ধাপে ধাপে ফরম পূরণ
বর্তমানে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অনলাইন-ভিত্তিক, যা পূর্বের ম্যানুয়াল পদ্ধতির চেয়ে অনেক সহজ এবং দ্রুত। সঠিক তথ্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত থাকলে আপনি সহজেই ঘরে বসেই আপনার ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই পোস্টে, আমরা আপনাকে ছবিসহ ধাপে ধাপে দেখাবো কিভাবে আপনি অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করবেন।
আবেদন করার আগে আপনার যা যা প্রয়োজন
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ (Birth Certificate): আপনার বয়স ২০ বছরের কম হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং ২০ বা তার বেশি হলে NID প্রয়োজন হবে।
- সঠিক ব্যক্তিগত তথ্য: আপনার NID বা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী নাম, বাবা-মায়ের নাম, পেশা, ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য সঠিক থাকতে হবে।
- বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ: বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল অথবা পানির বিলের কপি (ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে)।
- পেশাগত সনদের কপি (যদি থাকে): যেমন- ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, চাকরিজীবী হলে পেশাগত আইডি কার্ড ইত্যাদি।
- পূর্ববর্তী পাসপোর্ট (যদি থাকে): পূর্ববর্তী পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এটি প্রয়োজন হবে।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ (ধাপে ধাপে)
ধাপ ১: ই-পাসপোর্ট পোর্টালে প্রবেশ
প্রথমে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট পোর্টালে www.epassport.gov.bd প্রবেশ করুন এবং আপনার একাউন্ট লগইন করুন। লগইন করার পর হোমপেজের ডানদিকে থাকা "Apply Online" বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ২: ব্যক্তিগত তথ্য ও ঠিকানা (প্রথম অংশ)
আপনি যখন "Apply Online" এ ক্লিক করবেন, তখন একটি নতুন পৃষ্ঠা খুলবে। এখানে আপনার প্রাথমিক কিছু তথ্য দিতে হবে।
- আপনার বর্তমান ঠিকানা (জেলা, বিভাগ) নির্বাচন করুন।
- একটি সচল ইমেইল আইডি দিন এবং সেটি ভেরিফাই করুন।
- একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড সেট করুন।
ধাপ ৩: ব্যক্তিগত তথ্য ও ঠিকানা (দ্বিতীয় অংশ - বিস্তারিত)
ইমেইল ভেরিফিকেশন এবং প্রাথমিক লগইন করার পর আপনাকে আরও বিস্তারিত তথ্য পূরণ করতে হবে। এখানে আপনার NID বা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী সকল তথ্য দিতে হবে।
- আপনার নাম (বাংলা ও ইংরেজিতে)
- জন্মতারিখ, পেশা, ধর্ম, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা
- বাবা ও মায়ের নাম এবং পেশা
- বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা (জেলা, থানা, গ্রাম, পোস্ট অফিস, পোস্ট কোড)
ধাপ ৪: পাসপোর্ট ধরন ও মেয়াদ নির্বাচন
এই ধাপে আপনাকে পাসপোর্টের ধরন এবং মেয়াদ নির্বাচন করতে হবে।
- পাসপোর্টের ধরন: সাধারণত 'Ordinary' বা সাধারণ পাসপোর্ট নির্বাচন করুন।
- মেয়াদ: ৫ বছর নাকি ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট চান, সেটি নির্বাচন করুন। পাসপোর্টের মেয়াদ এবং এটি সাধারণ, জরুরী নাকি অতি জরুরী, তার ওপর ভিত্তি করে ফি এর পরিমাণ ভিন্ন হবে।
ধাপ ৫: পূর্ববর্তী পাসপোর্টের তথ্য (যদি থাকে)
যদি আপনার পূর্ববর্তী কোনো পাসপোর্ট থেকে থাকে, তাহলে সেই পাসপোর্টের নম্বর, ইস্যুর তারিখ এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ উল্লেখ করুন। যাদের প্রথম পাসপোর্ট, তারা এই অংশটি বাদ দিতে পারেন।
ধাপ ৬: আবেদন যাচাই ও সাবমিট
সব তথ্য পূরণ করার পর, আপনাকে একটি প্রিভিউ দেখানো হবে। এখানে আপনার দেওয়া সকল তথ্য পুনরায় মনোযোগ দিয়ে যাচাই করুন। কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নিন। সবশেষে, "Submit" বাটনে ক্লিক করে আবেদনটি জমা দিন।
ছবি ও অন্যান্য ডকুমেন্টস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: অনলাইনে আবেদনের সময় কোনো ছবি আপলোড করতে হয় না। পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ, ডিজিটাল স্বাক্ষর এবং ছবি) সংগ্রহের সময় আপনার ছবি তুলে নেওয়া হবে। তবে, আপনার অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন- NID, জন্ম নিবন্ধন, পূর্ববর্তী পাসপোর্ট, ঠিকানার প্রমাণপত্র ইত্যাদির মূল কপি এবং ফটোকপি প্রস্তুত রাখুন।
আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন হলে, আপনি একটি "Application Summary" এবং "Payment Slip" পাবেন। এই ডকুমেন্টগুলো প্রিন্ট করে নিন। এরপর অনলাইনে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে, প্রিন্ট করা ডকুমেন্টগুলো এবং আপনার অন্যান্য মূল ডকুমেন্টস নিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হোন।
সার্ভিস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।;
comment url